ডেস্ক নিউজ : ইউএস বাংলা কাঠমান্ডু ট্রাজেডিতে নিহত বৈশাখী টিভির সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের স্মরণসভায় বক্তারা বলেছেন, উদীয়মান তরুণ সাংবাদিকদের চলে যাওয়া রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার মৃত্যুতে পরিবার হারিয়েছে তাদের সন্তানকে, আর দেশ ও জাতি হারিয়েছে মেধাবী সাংবাদিককে। ফয়সাল বেঁচে থাকলে তার কাছ থেকে রাষ্ট্র সমাজ অনেক কিছু পেত। তিনি যে চেতনা ও স্বপ্ন বুকে ধারণ করতেন, আমরা যদি তা ধারণ করে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি তবেই তার আত্মার শান্তি পাবে।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) কনফারেন্স হলে ঢাকাস্থ শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে এই সভায় এখন থেকে প্রতি বছর ‘সাংবাদিক ফয়সাল স্মৃতি পদক’ প্রদানের ঘোষণা করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি রাজু আলীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও একেএম এনামুল হক শামীম, নারী নেত্রী মাজেদা শওকত, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও বৈশাখী টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সংগঠনের নেতারা।
কর্নেল (অব.) শওকত আলী ফয়সালের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, কোনো কোনো মৃত্যু পাখির পলকের মতো আবার কোনো কোনো মৃত্যু হিমালয়ের মতো। সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের মৃত্যু হিমালয়ের মতোই ভারী। তিনি বেঁচে থাকলে সাংবাদিক হিসেবে জাতিকে রাজনীতির অনেক দিকনিদের্শনা দিতেন। ফয়সাল যে চেতনা ও স্বপ্ন বুকে ধারণ করতেন, আমরা তা ধারণ করে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারলেই তার আত্মা শান্তি পাবে।
আহমেদ ফয়সালের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সংবাদ সংগ্রহ করার সুবাধে ফয়সালের সঙ্গে আমার সপ্তাহে কমপক্ষে তিনদিন দেখা-সাক্ষাৎ হতো। সব সময় হাসিখুশি ছেলেটি কাজের প্রতি খুব আন্তরিক ছিল। এলাকার মানুষের প্রতি তার একটা বিশেষ নজরও ছিল। খুব কম সময়ে মানুষকে আপন করে নিতে পারত। ফয়সালের মৃত্যুতে পরিবার হারিয়েছে তাদের সন্তানকে, আর দেশ ও জাতি হারিয়েছে উদীয়মান তরুণ মেধাবী সাংবাদিককে। ফয়সাল বেঁচে থাকলে তার কাছ থেকে রাষ্ট্র সমাজ অনেক কিছু পেত।
ঢাকাস্থ সাংবাদিক সমিতির নেতাদের উদ্দেশে শামীম বলেন, ফয়সালের পরিবারের প্রতি যদি কোনো ধরনের সহায়তার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের জানাবেন-যা যা করা দরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার পরিবারের কথা বলার সুযোগ করে দেয়া হবে। ফয়সালের অসময়ে চলে যাওয়া সাংবাদিকতা ও রাষ্ট্রের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও বৈশাখী টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, আহমেদ ফয়সালের সঙ্গে ৬ বছরের সর্ম্পক। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী প্রাণবন্ত ছেলেটি পুরো বার্তাকক্ষ মাতিয়ে রাখতেন। তি প্রথমে প্রযোজনা বিভাগে চাকরি নিলেও তার আবেদনের প্রেক্ষিতে রিপোটিং বিভাগে আনা হয়। কাজ পাগল ফয়সাল নিজ যোগ্যতায় টেলিভিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিভিআইপি (রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী) বীটে কাজ শুরু করেন। সে নিজের দায়িত্বের শেষ দিন পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। আসুন আমরা ফয়সালের পরিবারের পাশে থাকি। ব্যক্তিগত স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি রাজু আলীম ‘সাংবাদিক ফয়সাল স্মৃতি পদক’ প্রদানের ঘোষণা করেন। এখন থেকে প্রতি বছর এ পদক প্রদান করা হবে।